বিশেষ প্রতিনিধি:চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ গাজীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে এই ঘোষণা দেন তিনি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ওই চেয়ারম্যান প্রার্থী চাইলে মনোনয়নপত্র বাতিল আদেশের বিরুদ্ধে আগামী তিন দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।
জানা গেছে, দিয়াশলাই ফ্যাক্টরিতে কাঠ সরবরাহের যৌথ ব্যবসার প্রস্তাবনার পরিপ্রেক্ষিতে তিন লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে ২০০৪ খুলনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন স্থানীয় হুমায়ুন কবির।
ওই মামলায় আদালত আসামিকে খালাসের রায় দিলেও ২০০৮ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খুলনা দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী। আপিল শুনানি শেষে ইউসুফ গাজীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, এ রায় তিনি গ্রেফতার তথা আত্মসমর্পণের তারিখ থেকে কার্যকর হবে। সেই সঙ্গে আসামিকে ৩০ দিনের মধ্যে সাজা ভোগের জন্য খুলনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরপর ওই দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হলে হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ রুল জারি করে দণ্ডাদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। ২০১৭ সালে রিট পিটিশনটি পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে বিচারপতি মাইনুল হোসেন চৌধুরী এবং বিচারপতি জে বি এম হাসানের আদালত দণ্ডাদেশের স্থগিতাদেশ বাতিল করে পাঁচ বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড বহাল রাখেন। এরপর ইউসুফ গাজী উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে ২০১৭ সালে একটি পিটিশন দায়ের করলেও আদালত দণ্ডাদেশ স্থগিত না করে ১০ সপ্তাহের মধ্যে নিয়মিত লিভ টু পিটিশন দায়ের করার নির্দেশ দেন। অন্যথায় তা খারিজ হবে বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু ২০১৯ সালে লিভ টু আপিল করেন।
তার মনোনয়নপত্র বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন সদ্য পদত্যাগী চাঁদপুর জেলা পরিষদ প্রশাসক ও চেয়ারম্যান প্রার্থী ওসমান গনি পাটওয়ারী। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইকালে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউসুফ গাজীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এবারও জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া ওসমান গনি পাটওয়ারী তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, যেহেতু আসামি আপিল আদালতের রায় অনুযায়ী আত্মসমর্পণ না করে পলাতক থাকে এবং তার রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তির মাধ্যমে সাজা পরোয়ানা জারি করতে দেননি- তাই তিনি বর্তমানে আইনের চোখে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হিসেবে চিহ্নিত।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, জেলা পরিষদ আইন ২০০০ এর ৬(২)ঘ ধারা অনুযায়ী ‘নৈতিক স্খলনজনিত কোনও ফৌজদারি অপরাধের কোনও ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার যোগ্য হবেন না।’ এ অবস্থায় তার নির্বাচনি মনোনয়নপত্র বাতিলযোগ্য ও তিনি নির্বাচন করার অযোগ্য।
মনোনয়নপত্র বাতিলের আগে ইউসুফ গাজী বলেছিলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আপত্তি দিতেই পারেন। আমি আমার তথ্য-উপাত্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করবো। আশা করি, আপত্তিতে কোনও সমস্যা হবে না।’ তবে মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণার পর কয়েকবার তার মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
পরিচালনা পরিষদ:
সম্পাদক: আমিনুল ইসলাম আমিন তপদার
সহ-সম্পাদক রুবেল শিকদার
জুনিয়র সহ-সম্পাদক: নাজমুল হাসান
মামুন
উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি: কাজী
হাবিবুর রহমান
মোঃ নুরুল হক সরকার(উপদেষ্টা)
মেহেদী হাসান স্বপন (উপদেষ্টা)
জসিম উদ্দিন তপদার (উপদেষ্টা)
উপদেষ্টা সাংবাদিক তুহিন ফয়েজ
হাজী আবুল হোসেন(উপদেষ্টা)
বার্তা সম্পাদক:আবু কাউছার আহমেদ
প্রকাশক: এডিটর: রাহুল