বিশেষ প্রতিবেদন:
পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কৃতী সন্তান মোঃ নাসির উদ্দিন টানা তিনবার বিসিএস ক্যাডার হন। ৩৮ তম বিসিএস পরীক্ষায় ফিসারিজ ক্যাডারের মাধ্যমে শুরু হয় সফলতা। ৪০ তম বিসিএস পরীক্ষায় আবারো ফিসারিজ ক্যাডার এবং সর্বশেষ ৪১ তম বিসিএস পরীক্ষায় পুলিশ ক্যাডারের সুপারিশ প্রাপ্ত হন।
১৯৯৪ সালে বাউফল উপজেলার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম তার। গ্রামীণ পরিবেশে বেরে উঠা। তিন ভাইয়ের মধ্যে পরিবারের সবচেয়ে ছোট ছেলে তিনি। ছোট বেলা থেকেই ছিলেন তীক্ষ্ণ মেধার অধিকারী।
নিজ এলাকার দক্ষিণ গোসিংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভর্তির মাধ্যমে শুরু হয় শিক্ষা জীবনের পদচারনা। সেখান থেকে শুরু তার স্বপ্নবোনা ও সফলতা।
প্রাথমিক গণ্ডি পেরোনোর পর নিজ এলাকার স্বনামধন্য সোনামদ্দিন মৃধা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভর্তি হন। ৮ম শ্রেনিতে ট্যালেন্টপুল বৃত্তি এবং বাউফল উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। তখন থেকেই সকলের মধ্যে সারা পরে যায়।
একই বিদ্যালয়ে তিনি এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ+ পান। এরপর নটরডেম কলেজে কলেজে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হন। মধ্যেবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় শহরে লেখাপড়া করা মোটেও সহজ ছিল না। কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় এ+ পেয়ে তিনি উত্তীর্ণ হন।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১২-১৩ সেশন এ মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
শিক্ষা জীবন থেকে তিনি বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। ৩৮ ও ৩৯ তম বিসিএস এ ফিসারিজ ক্যাডার হয়েও থেমে থাকেননি তিনি। আরো সফলতার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন। এবং ৪১ তম বিসিএস পরীক্ষায় তার সেই কাঙ্খিত সফলতা অর্জিত হয়। ৪১ তম বিসিএস পরীক্ষায় তিনি পুলিশ ক্যাডারের সুপারিশ প্রাপ্ত হন।
পুলিশ ক্যাডার হওয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন,
"শুরু থেকেই বিসিএস পুলিশ এর প্রতি আমার আলাদা একটা আকর্ষণ কাজ করতো। দেশের জন্য বড় পরিসরে কাজ করার জন্য এটি একটি ভালো মাধ্যম। তাছাড়া ইউনিফর্ম জব হবার কারনেও ভালো লাগতো।
আমি গ্রাম থেকে উঠে আসা মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন। শুরু থেকেই আমার উপর আমার পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং সমাজের একটা আকাঙ্ক্ষা ছিলো যে ভালো কিছু করবো। সেটা সবসময়ই আমাকে কঠোর পরিশ্রম করে উৎসাহ প্রদান করেছে। আর এটাই আজকে আমাকে এই অবস্থানে এনেছে বলে আমি বিশ্বাস করি।"
তার সফলতায় আনন্দিত তার পরিবার, শিক্ষক ও এলাকাবাসী। এলাকাবাসী জানায়, " ও খুব (মোঃ নাসির উদ্দিন) ভালো মনের মানুষ। ছোটবেলা থেকেই নম্র ভদ্র ছিলেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় পড়ালেখার পাশাপাশি কাজও করতে হতো। তবুও সে থেকে থাকেনি। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সে তার সফলতা ছিনিয়ে এনেছে। আমরা মনে করি এ সফলতা দাবিদার সে নিজেই। আমরা দোয়া করি দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনুক।"
তার সফলতার পিছনে থাকা মানুষের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, "আমার এই দীর্ঘ সময়ে আমার বাবা-মা আমাকে সব ধরনের সাহায্য প্রদান করেছে। তাদের কষ্টের ফসল আজকে আমার এই অবস্থান। এ পর্যন্ত আসতে আমার অনেক বাধাঁই অতিক্রম করতে হয়েছে। সবার দোয়া আশির্বাদে আমি সব অতিক্রম করতে পেরেছি।"
তার দ্বায়িত্ব পালন নিয়ে তিনি বলেন, "রাষ্ট্র আমাকে যে দায়িত্ব দিবে আমি সেগুলো সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করার চেষ্টা করবো। অন্যায়ের সাথে কখনো আপোষ করবো না। দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাবো।"
কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন?—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "পিএসসির সিলেবাস, প্রশ্নের ধরন ও আগের বিসিএসের প্রশ্ন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা নিয়েছি। নিয়মিত লেখাপড়া, অনুশীলন ও পরীক্ষার মাধ্যমে প্রস্তুতিতে জোর দিয়েছি। একই বিষয়ে অনেকগুলো বই কম করে না পড়ে, দু-একটা বই বিস্তারিত পড়েছি। পাশাপাশি নিয়মিত বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা পড়তাম। সাম্প্রতিক বিষয়াবলি সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা রাখতাম। অন্য প্রার্থীদের চেয়ে আমি একটা জায়গায় ব্যতিক্রম ছিলাম। গ্রুপ স্টাডি করতাম না বললেই চলে। নিজে নিজে বাসায় নিরিবিলি লেখাপড়া করতে পছন্দ করতাম।"
ভবিষ্যত বিসিএস পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, "এটি একটি চাকরি মাত্র। ধৈর্য আর কঠোর পরিশ্রম করে এটা অর্জন করতে হয়। পরিশ্রম করলে আপনি সফল হবেনই। সেটা আজ হোক কিংবা কাল। তবে লেগে থাকতে হবে। না হলেও হতাশ হওয়া যাবেনা। দেশে আরো অনেক ভালো চাকরি আছে।"
উল্লেখ্য তিনি বর্তমানে বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত আছেন।
পরিচালনা পরিষদ:
সম্পাদক: আমিনুল ইসলাম আমিন তপদার
সহ-সম্পাদক রুবেল শিকদার
জুনিয়র সহ-সম্পাদক: নাজমুল হাসান
মামুন
উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি: কাজী
হাবিবুর রহমান
মোঃ নুরুল হক সরকার(উপদেষ্টা)
মেহেদী হাসান স্বপন (উপদেষ্টা)
জসিম উদ্দিন তপদার (উপদেষ্টা)
উপদেষ্টা সাংবাদিক তুহিন ফয়েজ
হাজী আবুল হোসেন(উপদেষ্টা)
বার্তা সম্পাদক:আবু কাউছার আহমেদ
প্রকাশক: এডিটর: রাহুল