মোঃ শরিফুল ইসলাম (রিপোর্টার)
এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বৃদ্ধি সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয়করণ প্রত্যাশী শিক্ষক কর্মচারী জোট। সংবিধান পরিপন্থী শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে গত ১৩ আগস্টে শিক্ষা উপদেষ্টার দেয়া প্রতিশ্রুতি পালন না করায় বিশ্ব শিক্ষক দিবসে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষক সংগঠনগুলো।
রবিবার (৫ ই অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবসে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের মহাসচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী এ ঘোষণা দেন ।
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ৯৭% রয়ে গেছে বেসরকারী । এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত (সরকার কর্তৃক আংশিক ভাতা প্রাপ্ত শিক্ষক) শিক্ষক সরকার থেকে শতভাগ বেতন পান । কিন্তু তারা তাদের বেতনস্কেলের নির্দিষ্টহারে বাড়িভাড়া ও অন্যান্য ভাতা যথার্থ পরিমাণে পান না। তারা কেবল ১০০০ টাকা বাড়িভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা পেয়ে থাকেন । অপরদিকে ৩% সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরকে শতভাগ বেতন ও স্ব স্ব স্কেলের নূন্যতম ৪৫% বাড়িভাড়া ও ২৫% চিকিৎসা ভাতা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা ও পেনশন সুবিধা পান ।
সরকারি ও বেসরকারি এসব শিক্ষকদের নিয়োগ যোগ্যতা ও নিয়োগের পরিক্ষা পদ্ধতির কাঠিন্য প্রায় সমান । তবে সরকার প্রদত্ত বেতন-ভাতা প্রাপ্তিতে তাদের রয়েছে বিস্তর পার্থক্য । শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধার ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায় । যেখানে একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী অপেক্ষা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যায় প্রায় ৫ থেকে ৬ গুন বেশি।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয় সুবিধা বেশি দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য তা মানা হয় না । এক্ষেত্রে শহুরে ও ধনী শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা গ্রামীণ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের চেয়ে অধিক সরকারি সুবিধা ভোগ করে থাকে । তাই সংবিধান পরিপন্থী এসব সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রাথমিকভাবে তাদের প্রাপ্ত মূল বেতনের ২০% হারে বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও কর্মচারীদের জন্য বেসিকের ৭৫% উৎসব ভাতা দাবি করেছিলেন ।
এক্ষেত্রে গত ১৩ আগষ্ট শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর রফিকুল আবরার এসব ভাতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন । কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে অর্থমন্ত্রণালয়ে প্রেরিত ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাবনার উপর ভিত্তি করে অর্থ মন্ত্রণালয় গত ৩০ নভেম্বর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে যা আজ প্রকাশ হয়েছে বলে শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী নিশ্চিত করেন ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোসা. শরীফুন্নেছা স্বাক্ষরিত ঐ প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফল হিসেবে কেবল ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়লে আজিজী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেন । ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এ ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন।এসময় তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবে গত ১৩ আগস্টে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের আন্দোলনে শিক্ষা উপদেষ্টার দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভাতা বৃদ্ধি না করায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাতাগার অবস্থান কর্মসূচির পুনঃ ঘোষণা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব দেশের প্রাথমিক শিক্ষাস্তর জাতীয়করণ করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা যথেষ্ট ভালো থাকলেও ২০২৫ সালেও মাধ্যমিক স্তর রয়ে গেছে বেসরকারি।
পরিচালনা পরিষদ:
সম্পাদক: আমিনুল ইসলাম আমিন তপদার
সহ-সম্পাদক রুবেল শিকদার
জুনিয়র সহ-সম্পাদক: নাজমুল হাসান
মামুন
উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি: কাজী
হাবিবুর রহমান
মোঃ নুরুল হক সরকার(উপদেষ্টা)
মেহেদী হাসান স্বপন (উপদেষ্টা)
জসিম উদ্দিন তপদার (উপদেষ্টা)
উপদেষ্টা সাংবাদিক তুহিন ফয়েজ
হাজী আবুল হোসেন(উপদেষ্টা)
বার্তা সম্পাদক:আবু কাউছার আহমেদ
প্রকাশক: এডিটর: রাহুল