মোঃ নুরুজ্জামান ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার প্রতিনিধি।
প্রতি শুক্রবার একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রচণ্ড সাদামাটা পরিবেশে, কিন্তু হৃদয়ের বিশালতা নিয়ে।
সবাই বসে আছেন খাওয়ার অপেক্ষায়,
মুখে শান্তির ছাপ।
এটি এক টুকরো মানবতার দলিল।
এখানে নেই দম্ভ,নেই পরিচয়ের দেয়াল—
আছে কেবল মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর গল্প।
এই মহৎ উদ্যোগ
“মেহমানখানা”
যে মানুষগুলো গোপনে-নিভৃতে এটি টিকিয়ে রাখছেন।
তাঁদের প্রতি রইল অকৃত্রিম শ্রদ্ধা।
একজনের পেটের ভাত,
আরেকজনের চোখের পানি মুছে দিতে পারে।
মানুষের পাশে দাঁড়ানোই সবচেয়ে বড় ইবাদত।
চলুন এক প্লেট ভাত দিয়ে গড়ি ভালোবাসার
মেহমানখানা”
একপ্লেটভাত
মানবতা”
ঠাকুরগাঁও
বালিয়াডাঙ্গীতে
হারুন ভাই এর
করোনার”জন্মগাথা!
এক প্লেট ভাতের গল্প”
“মেহমানখানার জন্মকথা।
সময়টা ছিল করোনার শুরু।
প্রাণভয়, অনিশ্চয়তা আর ক্ষুধার মধ্যে লাখো মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছিল সাহায্যের আশায়।
তেমনি একদিন,
এক গরিব, অসহায় ব্যক্তি বড়লোকদের গেটের সামনে ঘুরছিলেন!
শুধু এক প্লেট ভাতের আশায়।
কিন্তু কেউ তাকে সাহায্য করেনি।
এক দুই টাকা তো দুরের কথা সেই অসহায় মহিলা
টি কে”””
ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।
এবং অনেক কথা দিয়ে তাকে অপমানিত করা হয়। এই অর্থ সম্পদশালী বড় লোক।
এই বেদনার চিত্র ধরা পড়ে–
সিনিয়র সাংবাদিক হারুন ভাইয়ের চোখে।
তিনি আর আমরা—
কয়েকজন সহকর্মী মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম,
এই দুর্দিনে অন্তত একবেলা যদি গরিবদের পেট ভরে ভাত খাওয়ানো যেত ? তাহলে এই গরিব অসহায় দের বড়লোকদের গেটের সামনে ঘোরাঘুরি
অথবা
অপমানিত হতে হবে না। তখন সিনিয়র সাংবাদিক হারুন অর রশিদ ভাই তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়।
তার সাথে আমরাও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলাম।
কারও সমর্থন এল,
কারও কটুক্তি।
কারও কণ্ঠে বিদ্রুপ—
তখন রশিদ ভাই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল
প্রতি শুক্রবার নামাজের শেষে গরিবদেরকে একবেলা খাওয়ানোর।
তখন নাম রাখা হইল হতভাগা সেন্টার।
আবার অনেকের মন্তব্য খারাপ ভাবে আসছে।
একজন অসহায় গরিব হতে পারে কিন্তু তাদেরকে হতভাগা
বলে বিদ্রুপ করা যায় না।
সবার পরামর্শে নাম পরিবর্তন করা হইল।
গরিব দের”
“মেহমান খানা”
গরিবদের জন্য, সম্মানের সঙ্গে খাবার পরিবেশন করা হয়।
আজ থেকে ৪ বছর দুই সপ্তাহ পূর্ণ হইলো।
সেই থেকে শুরু
আজও চলছে গরিব দের মেহমান খানা।
আজ ২১০ তম সপ্তাহে ছিল
খাসির” মাংস” সবজি” ডিম” ডাল” সাদা ভাত।
প্রতি শুক্রবার, নামাজের পর
অসহায় মানুষদের একবেলা খাওয়ানো হয়,
ভাত, মাংস, ডাল, ডিম— যা সম্ভব হয় ততটুকু।
এখানে কেউ পারিশ্রমিক নেয় না।
রাঁধেন, পরিবেশন করেন নিঃস্বার্থ কিছু মানুষ।
দেশ-বিদেশ থেকে অনেকে,
ফেসবুকের স্ট্যাটাস দেখে, নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দান করছেন।
আমাদের একটিই লক্ষ্য-
মেহমান খানাকে বাঁচিয়ে রাখা।