জলিলুর রহমান জনি, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সোনগাছা ইউনিয়নের গুপীরপাড়া গ্রামের ৩নং ওয়ার্ডের আলোট এর রাস্তাটি যেন এখন জনদুর্ভোগের প্রতীক। ৫০০ মিটার দীর্ঘ এই রাস্তা এলাকাবাসীর জন্য এক যন্ত্রণার নাম হয়ে উঠেছে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বয়স্ক মানুষ, রিকশা-ভ্যান চালক—সবাইকে পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় কষ্ট।
বিগত কয়েক বছর ধরেই রাস্তাটি খানাখন্দে ভরা। অল্প বৃষ্টিতেই কাদা ও জলাবদ্ধতায় তলিয়ে যায় পুরো পথ। তখন স্থানীয়দের যাতায়াত প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে গ্রামের মানুষজন বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে ঘুরে ২ থেকে ৩ কিলোমিটার বাড়তি পথ অতিক্রম করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা হাবিবুর রহমান ভাষায়—এই রাস্তা দিয়া এখন কেউ চলতে পারে না। একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটাও যায় না, গাড়িও যায় না। বাচ্চারা স্কুলে যেতে না পেরে ঘরে বসে থাকে।
এলাকাবাসী জানায়, বিগত সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বারবার রাস্তা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে কোনো কাজ হয়নি। নানান প্রকল্পের কথা শোনা গেলেও রাস্তাটি আজও আগের অবস্থায় পড়ে আছে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে—হাঁটতে গিয়ে পড়ে যাওয়া, ভ্যান উল্টে যাওয়া, এমনকি অসুস্থ রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় ভোগান্তি নিত্যদিনের বিষয়।
একজন বৃদ্ধ বাসিন্দা কণ্ঠে ক্ষোভ ঝরে পড়ল—কেউ মারা গেলেও এই রাস্তা দিয়া নেওয়ার উপায় নাই। পানিতে থাইকা মানুষ পড়ে যায়। কতবার বলছি, তবুও কেউ আসে না।
৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মহর আলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেননি। তার নীরবতায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মনে করেন, স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা এই সমস্যাকে আরও দীর্ঘস্থায়ী করছে।
সবশেষে স্থানীয়রা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত রাস্তা সংস্কারের জোর দাবি জানিয়েছেন। তাদের আশা—একদিন হয়তো তারা পাকা ও চলাচলযোগ্য একটি রাস্তা পাবেন, যা তাদের সন্তানদের স্কুলে পৌঁছে দেবে, অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিতে সাহায্য করবে, আর গ্রামের অর্থনৈতিক গতিশীলতাও ফিরিয়ে আনবে।
গুপীরপাড়া গ্রাম আজ উন্নয়নের মূল স্রোত থেকে পিছিয়ে পড়েছে কেবল একটি রাস্তার অভাবে। অথচ এই ছোট্ট ৫০০ মিটার পথটাই হতে পারে পরিবর্তনের শুরু—যদি প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা বাস্তব উদ্যোগ নেন।